চিন্ময় দাসকে নিয়ে ভারতের নতুন মন্তব্য
- By Jamini Roy --
- 29 November, 2024
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা ও ইসকন বিতর্ক নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান জোরালোভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ইস্যুতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অবস্থান নিয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান, চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত হবে বলে ভারত আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমরা আশা করি তার আইনি অধিকার পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার পাবেন।”
সংবাদ ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলেন, “হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হুমকি ও হামলার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। বাংলাদেশ সরকারের উচিত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
ইসকনকে বাংলাদেশে ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ হিসেবে আখ্যা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রণধীর জয়সওয়াল ইসকনের বৈশ্বিক সুনাম এবং সামাজিক অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ইসকন একটি বৈশ্বিক সংগঠন, যার সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার ভালো রেকর্ড রয়েছে। আমরা আশা করব, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।”
ভারতের বিবৃতির জবাবে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। ঢাকার বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “ভারতের এমন বিবৃতি দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থি। কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থার অংশ। ভারতের এমন বিবৃতি আমাদের গভীর দুঃখজনক মনে হয়েছে।”
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহসহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত করে গত ২৫ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাকে জামিন না দেওয়ার পর ভারতের উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পায়। দিল্লি থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর উগ্রবাদী হামলার ধারাবাহিকতায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার উদ্বেগজনক। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং মন্দির ভাঙচুরের মতো ঘটনাগুলো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।”
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার ও ইসকন ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং আইন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখা উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।